Detail

Home - লাইফস্টাইল - শাড়ি নিয়ে দুছত্র

শাড়ি নিয়ে দুছত্র

আব্দুল্লাহ আবু সায়্যীদ স্যার একটা লেখা লিখেছিল শাড়ি নিয়ে প্রথম আলোতে। এ নিয়ে অনেকে সমালোচনা হয়েছিল অনেক। তখন আমি লিখেছিলাম:

১। বিষয়টা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে সেটার উপর নির্ভর করছে এটা ভালো না মন্দ লেখা। প্রতিটি মানুষই (পুরুষ বা নারী) নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে চায়। পরিপাটি হয়ে বা সুন্দর পোষাকে যাতে তাকে খুব আকর্ষণীয় লাগে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে লেখাটি ভালো লেখা। আমি সে দৃষ্টি নিয়েই পড়লাম।

আর নারী মাত্রই কেবল শরীরের ঢেউ দেখানো পোষাক পড়তে হবে – এমন দৃষ্টি থেকে লেখা হলে বা ভাবা হলে তা নিশ্চয়ই মন্দ। সেটা কোন সুস্থ মানুষ সহমত হবেনা।

যাই হোক, আমি নারী হলে প্রতিদিন শাড়ি পড়তাম। যাতে আমায় বেশি সুন্দর দেখায় তা মিস করার লোক আমিনা।

২। ‘সুন্দর হবার জন্য শাড়ি পরতেই হবে স্বামী বা সমাজ বা অফিসের চাপে‘ বনাম ‘আমি নারী, আমারে শাড়িতে ভালো লাগে তাই শাড়ি পরি‘- দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য। আবার ‘চাকুরি করা যাবেনা স্বামী, সমাজ বা ধর্মীয় চাপে‘ বনাম ‘ আমার ভালো লাগে তাই আমি চাকুরি না করে স্বাধীন কাজ করি বা ঘরে বসে গৃহীনী হয়ে কাটাই‘ -দুটোর মধ্যে অনেক পার্থক্য।

রাতদিন এ পার্থক্যটা অনেকে খুব খেয়াল করেনা। যে কারণে অনেকেই ‘শাড়ি পরে মানেই শরীর দেখানোর জন্য পরে বা বাধ্য হয়ে পরে‘ কিংবা ‘চাকুরি করেনা মানেই যোগ্যতা নেই, বা পরিবার চাকুরি করতে দেয়না‘ – এমন অতি সাধারণীকরণ উপসংহার টানে।

এ কারণে স্থান কাল পাত্র পরিপ্রেক্ষিত ও যে করছে তার নিয়ত কি সেটা জরুরি।

৩। জেন্ডার বিষয়ে মাস্টার্স এ কোর্স করেছিলাম জাপানের কোবে ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে আমেরিকান প্রফেসরের অনেক অভিজ্ঞতা ও তাত্ত্বিক আলোচনা শুনেছি, পড়েছি অনেক আলোচিত লেখা ও বই। ২৫টি দেশের নানানরকম জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশনের উপর শেয়ার করেছে ক্লাসের বন্ধুরা। দিয়েছে শত শত বিচিত্র উদাহরণ বৈষম্যের। ছিল ফিল্ডওয়াক ও থিসিস লেখা।

আর বাংলার মাঠে ঘাটেতো কাজের অভিজ্ঞতা আছেই। সেসব মাথায় রেখেই বলছি।

ক) শুধু শাড়িই নয়, লুঙ্গিসহ তামাম পৃথিবীর সকল শৈল্পিক ও ট্রাডিশনাল পোষাকের জয় হোক। যার ভালো লাগে পরবে ও যে পরবে তারে সকলে আকর্ষণীয় বলবে- এটাই আজকের স্লোগান। জেন্ডার ফেন্ডার ফু:

খ) সায়্যীদ স্যার যৌনআবেদনময়ী বলাতে দোষ হইসে বুঝলাম; সমালোচনাকারীদের মধ্যে কে আছে এমন যে যৌনআবেদনময়ী হতে চায়না? ঠগ বাছতে গা উজার হবে কিন্তু!

গ) যার ইচ্ছা শাড়ি পরবে, যার ইচ্ছা পরবেনা; এ নিয়ে জোর করা চলবেনা। জেন্ডার ইস্যু বিবেচ্য। (অফটপিক: ভালা জিনিস না পরলে কী আর করা! )

ঘ) যে কাজ পারে সে শাড়ি পরেও ঘরে বাইরে সব কাজ করে।

যে কাজ পারেনা, সে শাড়ি না পরেও পারেনা। শাড়ি একটি সুন্দর শৈল্পিক পোষাক।

শাড়ির জয় হোক, তথা ট্রাডিশনাল সকল সুন্দর পোষাকের জয় হোক, আর সব নিপাত যাক।

.

ড. সফিকুুল ইসলাম

(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )

Share Now
Author

Dr. Shafiqul Islam

(BBA, MBA, DU; Mphil, Japan; PhD, Australia) Deputy Secretary, Government of Bangladesh. Chief Executive Officer, Cumilla City Corporation, Local Government Division, Ministry of LGRD
error: Content is protected !!

My Shopping Cart