রোমান রাজনীতি
যীশু খ্রীষ্টের সময়ের কথা। রোমান রাজা এক গভর্ণরের এলাকায় বেড়াতে গেছেন। গভর্ণরের স্ত্রী রাজকীয় ডিনার দিলেন রাতে। পরে পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে রাজাকে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যেতে বলেছেন। ‘You are quite safe here. No worries.‘
রাজা বললেন: Emperors are safe nowhere, never.
এত পুরাণ কথা, তবু কত নবরূপে সত্য এটি!
তবু মানুষ রাজা হতে চায়!
………………….
স্বার্থের জোট ভাঙ্গে ত্বরা।
………………………………
যে কথা বলছিলাম।
জুলিয়াস সিজার জোট করে পম্পে আর ক্রাসাসের সাথে। ক্ষমতার বলয়ে থাকার জন্য সিজার নিজের মেয়েকে বিয়ে দেয় পম্পের কাছে।
সিনেটরদেরকে পুতুল বানিয়ে সিজার নিজে পম্পের সেনাদের জমিদারি পাইয়ে দেবার ব্যবস্থা করে, ক্রাসাসকে সব ব্যবসায়ীক সুবিধা পাইয়ে দেয়। এসব করতে গিয়ে যত অন্যায় লাগে তাও করেছে জুলিয়াস সিজার।
কিন্তু বিধি বাম।
যারা দেয় তাদের সব দেওয়া হয়ে গেলেও, যারা পায় তাদের পাওয়া শেষ হয়না।
তাই বছর না যেতেই ক্রাসাস ও পম্পে মিলে সিজারকে সরাতে উঠে পরে লাগে। দুজনে মিলে সরিয়ে দেয় সিজারকে। প্রায় জোর করে তার অমতে কোন একটি ছোট জেলার গভর্ণর বানিয়ে পাঠিয়ে দেয়।
স্বার্থেরে জোট ভেঙ্গে যায়। সিজার খুব কষ্ট পায়।
…………………….
সংলাপ:
…………………………………
রোমান সভ্যতায় জুলিয়াস সিজার যখন সেরা যোদ্ধা তখনকার কাহিনী।
সেনাবাহিনী পম্পের কবজায় আর ব্যবসায়ীরা সব ক্রাসাসের কব্জায়। রাষ্ট্রযন্ত্র কার নিয়ন্ত্রণে যাবে- এ নিয়ে পম্পে ও ক্রাসাসের মধ্যে প্রায় যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব।
জুলিয়াস সিজারের যদিও ক্রাসাসের সাথে সখ্য; তবু এ যুদ্ধ-যুদ্ধ সময়ে কার পক্ষে যাবে তা নিয়ে তার মধ্যে সংশয় দেখা দিল। কারণ সিজারের বাবা এরকম যুদ্ধে একপক্ষ নিয়েছিলো এবং সে যুদ্ধে তার বাবার পক্ষ হেরে যাওয়ায়, সিজারদের পরিবারের অনেক ক্ষতি হয় এবং পথে বসে। সঙ্গতকারণেই নতুন করে সিজার আর বাবার মতো ভুল করতে রাজিনা।
তাই সে গোপনে পম্পে ও ক্রাসাসকে এক জায়গায় ডাকলো। গোপন স্থানে পম্পে ও ক্রাসাস একে অপরকে দেখে ক্ষেপে গেলো। যাই হোক, জুলিয়াস সিজার দুজনকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে, তোমরা মারামারি করলে দুপক্ষের ক্ষতি হবে। তার চেয়ে চলো সবাই ভাগাভাগি করে নেই।
পম্পের সব সৈন্য বিভিন্ন জায়গার জমিদারি পাবে। তাহলে সৈন্যরা সব পম্পের কব্জায় থাকবে ও খুশি হবে। আর ক্রাসাস পাবে সব ব্যবসায়িক সুবিধা। তাতে তার ব্যবসায়ীক গ্রুপ খুশি হবে ও নিজের পকেট ভারি হবে। আর জুলিয়াস সিজার পাবে কনসালশীপ যে সিনেটরদের মাধ্যমে পম্পে ও ক্রাসাসের সব চাহিদা পাস করিয়ে দেবে।
বাকবিতন্ডার পর অবশেষে তিনজনে মিলে এ কোয়ালিশন মেনে নিল। যার যার সুবিধার্থে এ জোট গঠিত হলো। এ জোটের নাম ছিল ফার্সট ট্রিয়ামভিরেট কোয়ালিশন।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )