অবিশ্বাস
সারা পৃথিবী একজনকে ধিক্কার দিচ্ছে, ঘৃণা করছে, ছিছি রিরি করছে, কিন্তু তার নিকটতম প্রিয় মানুষেরা তাকে বিশ্বাস করছে, সম্মান করছে, আস্থা রাখছে, ভালোবাসছে। তার জগত হয়তো চলবে। অনেকটা সুন্দর ও সাবলীলভাবেই চলবে।
.
আবার
নিকটতম আপনজনেরা একজনকে ধিক্কার দিচ্ছে, ঘৃণা করছে, ছিছি রিরি করছে, কিন্তু সারা পৃথিবীর লাখো লোক তাকে বিশ্বাস করছে, সম্মান করছে, আস্থা রাখছে, ভালোবাসছে। তার জগত চলবে না। নিজেকে কষ্ট দেওয়া বা আত্মহত্যা করা তার কাছে পান্তাভাত মনে হবে।
কারণ, দূরের মানুষদের চাইতে কাছের মানুষদের আচরণ মানুষকে বেশি নাড়া দেয়।
এটাতো গেলো সাধারণদের কথা।
.
অসাধারণদের ক্ষেত্রে কী ঘটে?
.
অসাধারণ লোকটি যদি ভালো হয় তবে নিম্নরূপ ঘটে।
সারা পৃথিবীর লোক এবং নিকটতম আপনজনেরাও তাকে ঘৃণা করছে, ধিক্কার দিচ্ছে, ছিছি রিরি করছে, কিন্তু সে নিজে জানে যে তার দ্বারা কোনো অন্যায় হয় নি, সে নিজের কাছে স্বচ্ছ, বিবেকের কাছে পরিস্কার, আত্মোপলব্ধিতে খুশি ও সন্তোষ্ট, তার জগত আনন্দময়। সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। স্বাভাবিক জীবন চালায়।
আবার
সারা পৃথিবীর লোক এবং নিকটতম আপনজনেরাও তাকে ভালোবাসছে, বিশ্বাস করছে, আস্থা রাখছে, পছন্দ করছে। কিন্তু সে নিজে জানে যে তার দ্বারা যা হয়েছে তা চরম অন্যায়, সে ঘৃণার পাত্র, নিজের কাছেই নিজেকে হেয় ও অসম্মানিত লাগছে। তার জগত আসলে সত্যি সত্যিই শূন্য।
.
কিন্তু অসাধারণ মানুষটি যদি চরম খারাপ হয় তবে নিম্নরূপ ঘটে।
সারা পৃথিবীর লোক এবং নিকটতম আপনজনেরাও তাকে ঘৃণা করছে, ধিক্কার দিচ্ছে, ছিছি রিরি করছে, কিন্তু সে নিজেও জানেও জানে সে এইরকম ঘৃণারই পাত্র। তবে সে এসব গায়ে মাখায় না। কে কি ভাবলো তা দিয়া তাঁর জগত আক্রান্ত না। সে বহাল তবিয়তে অপকর্ম করেই যায়।
সারা পৃথিবীর লোক এবং নিকটতম আপনজনেরাও একজনকে ভালোবাসছে, বিশ্বাস করছে, আস্থা রাখছে, পছন্দ করছে। কিন্তু সে নিজে জানে যে তার দ্বারা যা হয়েছে তা চরম অন্যায়। তবু সে এসব গায়ে মাখায় না। কে কি ভাবলো তা দিয়া তাঁর জগত আক্রান্ত না। সে বহাল তবিয়তে অপকর্ম করেই যায়।
অসাধারণ যারা তারা ভালো হোক বা মন্দ হোক, হাজার মানুষের কথা তাদের গায়ে লাগে না।
.
অসাধারণদের কথা বাদ। আমরা সাধারণ, আর স্বাভাবিক মানুষ হিসেবেই আমরা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করি।
জগত বড় বিচিত্র। মানুষে মানুষে ভাবনা ভিন্ন হয়, আবার একই মানুষের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবনা হয়।
বৈচিত্র্যতা আর জীবনের উথাল-পাতাল-অবস্থাই, মনুষ্য জীবনের সৌন্দর্য্য।
জুন, ২০২১।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )