Me and Gandhi. আমি ও মহাত্মা
দাদার সাথে দেখা। বললাম দাদু কেমন আছো?
: ভালো। তুই কেমন আছিস?
: ভালোতো ছিলাম। কিন্তু তুমি স্বর্গে না গিয়ে থাইল্যান্ডে কী করো?
: স্বর্গেই ছিলাম। ওরা আমার ছায়া ধরে নিয়ে আসছে!
: তুমি কি ভারতবর্ষ দেখতে পাও?
: পাই তো। তিন টুকরো হয়ে এখন তিন ধরণের সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মবিদ্বেষ নিয়ে আমজনতা আগাচ্ছে আর পুঁজিপতিরা সব লুটেপুটে খাচ্ছে।
: দাদু তুমি বলেছিলে “যদি সঠিক পথ বেছে নেন, তাহলে আশা ছাড়বেন না। কারণ, যতই বাঁধা-বিপত্তি আসুক না কেন একদিন না একদিন ভাল মানুষদের জয় হবেই হবে”। তুমি তো ভালো মানুষ ছিলে তবু তোমার মতো করে ভাররতবর্ষে জনতা ভাবে নি কেন? তোমার বিশ্বাস গুলো জয়ী হয় নি কেন?
: দাদু কথা না বলে অস্ফুট বিড়বিড় করছে।
: দাদু তুমি বলেছিলে “কাউকে সন্তুষ্ট করতে বা কোনও ঝামেলা এড়াতে কোনও কাজে ‘হ্যাঁ’ বলাটা সবথেকে বড় পাপ। যদি মনে করেন এই কাজটা আপনি করতে পারবেন না, তাহলে বিশ্বাসের সঙ্গে ‘না’ বলতে শিখুন।“। তোমার কথামতো আমি যাদের না করেছি , কারণ তারা সব অন্যাায় আবদার নিয়ে আসে। তাই না করি। তারা আমাকে ভুল বুঝেঁ। আমার ক্ষতি করার জন্য পেছনে লাগে। তুমি কি মনে করো এখনো আমার তোমার কথা মানা উচিত?
: হ্যাঁ উচিত। পরিণামে ভালো ফল পাবি।
: আমারতো ধৈর্য নাই তোমার মতো! তুমি তো বিয়ে না করে কাটিয়ে দিতে পারো। আমার তো তর সয় না।
: ইয়োগা করবি আর প্রচুর হাঁটবি। গণমানুষের সাথে মিশবি। তাতে ধৈর্য বাড়বে।
: বাংলার মানুষ এত স্বার্থপর লোভী আর এত হাউকাউ করে বেশি মিশলে মাথা নষ্ট হওয়ার যোগাড়। ওদের লেভেলে না নামিয়ে ছাড়ে না।
: তোর প্রজ্ঞা আর ধীশক্তি বাড়াতে হবে। তুই আমার আরেকটা কথা মনে রাখবি। “আপনি আদৌ শক্তিশালী কিনা, তা কিন্তু দৈহিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে না। বরং আপনি মানসিক ভাবে কতটা শক্তিশালী,তার উপর সবটা নির্ভর করে থাকে। তাই মানসিকভাবে নিজেকে শক্তিশালী করে তুলুন।“
: জ্বী দাদু। তবে তোমার একটা বাণী আমি মানি । “মানুষ নিজেকে যা ভাবে তাই হয়ে যায়। যদি আমি ভাবি আমি একটি কাজ করতে পারব না, সম্ভবত আমি কাজটি করতে অক্ষম হয়ে যাব। অন্যদিকে, আমি যদি বিশ্বাস করি যে আমি কাজটি করতে পারব, তাহলে অবশ্যই আমি কাজটি করার জন্য সক্ষমতা অর্জন করব, যদিও প্রথম দিকে আমি কাজটি করতে সমর্থ নাও হই।“ সত্যিই জীবনে এর ফল পেয়েছি
: গুড। তুই পারবি। তোরে দিয়ে হবে!
: দাদু আমার সময় কম। টিকিটের মেয়াদ পার হয়ে যাবে। আমিতো চলে যাবো। সবাই তোমার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে। আমি কী তুলবো? তোর ছবি তোলা হয়ে গেছে। বাড়িতে গিয়ে মোবাইল দেখিস। রাস্তাঘাটে মোবাইল দেখিস না। দেখতে আসছিস দেখ। মোবাইল ফেসবুক সব ফক্কা জিনিস। এসবে সময় দিস না।
: ঠিক আছে দাদু। আমাকে আর তিনটি বর /উপদেশ দাও।
: ঠিক আছে। লিখে নে।
১। “মনুষত্বের উপর বিশ্বাস হারাবি না। মনুষত্ব ভালো সাগরের মত। সাগরের কয়েক ফোঁটা জল নোংরা হলে সমস্ত সাগর নোংরা হয়ে যায় না।“
২। “আমার অনুমতি ছাড়া আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে মানসিকভাবে আঘাত করতে পারেনি।“
৩।.”অনেক টাকার মালিক হওয়ার স্বপ্ন না দেখে, বরং ছোট ছোট সুখের সন্ধানে বেরিয়ে পড়। দেখবি, দুঃখ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবে না।
: ভালো থেকো দাদু।
: তোরাও ভালো থাকিস। বাংলা ভালো থাকলে ভারতবর্ষ ভালো থাকলে আমিও ভালো থাকি।
( ছবি মাদাম তুসো, থাইল্যান্ড, ২৩ এপ্রিল ২০২২)
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )