জীবনের উঠানামা: ৫টি ঘটনায় তিনটি শিক্ষা
১।
এক জেলায় উপজেলা পরিষদ ইলেকশান হবে। অনেকে প্রার্থী হতে চেয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় এমপি যোগ্য বিশ্বস্ত পরীক্ষিত জনপ্রিয় নেতাকে নমিনেশন দিলনা। নমিনেশন দিলেন অনেক কম জনপ্রিয় হাতের গ্রীপে রাখা যাবে এমন একজনকে। সঙ্গতকারণে দীর্ঘকালের রাজনীতিবিদ হওয়া সত্ত্বেও নমিনেশন না পাওয়া ব্যক্তি খুব কষ্ট পেয়েছিল। স্থানীয় এমপির ধারণা ছিলো ওনাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানালে ভবিষ্যতে সে আরও জনপ্রিয় হয়ে এমপি হয়ে যাবে। তাই জেনুইন নেতাকে উপজেলা চেয়ারম্যান হতে দেয়নি।
খোদার কী লীলা। অনেক বছর পরে এমপি সাহেব আর নমিনেশনই পেলনা। ওই উপজেলা চেয়ারম্যান হতে না পারা সেই লোক নমিনেশন পেল। এমপিও হলো।
২
উপজেলা স্কাউটের একটি পদে কে যাবে না যাবে এ নিয়ে কতিপয় লোকের মধ্যে সাঙ্ঘাতিক দ্বন্দ, ঝগড়া বা মারামারি পর্যায়ে। এ নিয়ে তদবির, অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগ মহা কেলেঙ্কারি অবস্থা। যাই হোক সকল হোমরা চোমড়াসহ কতিপয় ব্যক্তি মিলে একজনকে স্কাউট কমিটিতে ঢুকতে দেয়নি। হয়তো তারা সঠিক ছিল। তবু এ পদ নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করা ঠিক হয়নি। সে ব্যক্তি কষ্ট পেলেও তা মেনে নিয়েছিল।
খোদার কী লীলা! কয়েকবছর পরে যাকে উপজেলা স্কাউটের সামান্য সামাজিক পদে আসতে দেওয়া হয়নি সে হয়ে গেলো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
৩।
বাড়ি বাড়ি ঝগড়া তারই ফলে একজনকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হতে দেওয়া হয়নি। যাতে সে মেম্বার না হতে পারে ওয়ার্ডের প্রতিবেশী শত্রুরা তার সব ব্যবস্থা করলো।
কয়েকবছর পরে সেই মেম্বার হতে না পারা ব্যক্তি হয়ে গেলো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। খোদা করলে কে ঠেকায়?
৪।
উপজেলা পর্যায়ের রাজনৈতিক কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নাম রাখতে দেওয়া হয়নি। এর জন্য যত জাল বা ফাঁদ পাতা লাগে তার সবই করেছিল প্রতিদ্বন্দীরা। বেচারা খুব কষ্ট পেয়েছিল। তবে হাল ছাড়েনি। লেগেছিল মনে প্রাণে। ১০ বছর পরে দেখা গেলো উপজেলা পর্যায়ে পদ না পাওয়া সে ব্যক্তি হয়ে গেলো মন্ত্রী।
৫।
এক জেলা প্রশাসক (উপসচিব) দুই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের জীবন তছনছ করে ফেললো শোকজ করে করে, বকতে বকতে, বদলি করতে করতে। হয়তো তারা অযোগ্য ছিল, অকর্মা ছিল। তারপরও তদারকি বা টাইট দেওয়া বেশিই হয়েছিল। তারা কষ্টও পেয়েছিল।
১৫ বছরের ব্যবধানে সেই উপসচিব উপসচিব হিসেবে অবসর নিল। আর দুই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হয়ে গেলো সচিব। খোদার কী লীলা।
শিক্ষা: ক) উপরওয়ালা যা লিখে রাখে তা হবেই। দুনিয়ার কারো ক্ষমতা নেই তা আটকে রাখে।
খ) কষ্ট বা আঘাত পেলে বা দুর্দশায় মানুষ আরো শক্ত হয়, আরো বেশি করে পরিশ্রম করলে পরিকল্পনা করলে আর ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকলে একদিন সফলতা আসবেই।
গ) কোনকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণে বা হিসাবে নেই। আমরা হিসাব করি আমাদের জানা দিয়ে। আমাদের জানার বাইরের অনেক উপকরণ/পরিবেশ/মানুষ আমাদের পথকে সুগম করে বা দূর্গম করে।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )