Detail

Home - দর্শন ও বুদ্ধিজীবিতা - পেটের ক্ষিধা মেটাতে পারে, চেটের ক্ষুধা মিটাতে পারে না

পেটের ক্ষিধা মেটাতে পারে, চেটের ক্ষুধা মিটাতে পারে না

আজ কিছু বাগান ভ্রমন করলাম। কৃষি খামারও বলা যায়। পেয়ারা বাগানে গেলাম। বড়ই বাগানে গেলাম। বড় বড় পেয়ারা গাছে ধরে আছে। আমরা ইচ্ছামতো পাড়লাম ও খাইলাম। যেন আমাদেরই বাগান। আমাদেরকে বাধা দেওয়া হলো না। কারণ আমরা পরমাত্মীয় বা সমাজের ধাপের কেউ। কিন্তু টোকাই বা মিসকিন বা চোর যদি বাগানে ঢুকতো তাহলে ওদেরকে পেয়ারা পাড়তে ও খেতে দেওয়া হতো না। কিন্তু এদেরই ক্ষুধা বেশি, দরকারও বেশি। তবু ওরা কেন ফলের বাগানে ঢুকতে পারবে নাা? ছিঁচকে চোর, মিসকিন বা দুষ্টু গরীব পোলাপান ঢুকতে পারবে না। কিন্তু বুলবুলি ঢুকতে পারে। দিনরাত খায়। খেতে খেতে যৌনান্দে মাতে। মাতোয়ারা হয়ে বাচ্চা ফোটায়। সেই বাচ্চার ছবি তুলে মালিক ও মালিকের পরমাত্মীয়রা আনন্দ পায়। পৃথিবী এমনই। কেন ফসল ফলানো হয়, কে খাবে কে খাবে না, কে পাবে কে পাবে না তার স্তর ভাগ করে করে আমরা নানান লেয়ার করি। কাউরে বাদ দিই কাউরে দিয়ে দিই। কেউ খাইলে আমাদের জ্বলে না কেউ খাইলে আমাদের খুব জ্বলে। ভাগজোক করে খাওয়াতে মানুষের মতো এত কুটচাল বুদ্ধির সৃষ্টি আর পাওয়া যায় না। পরে বসে থাকলাম। সামাজিক আড্ডাও দিলাম। কী বললাম আর কী বললাম না তা মনে রাখলাম না। মানে মনে রাখার মতো কোনো কথাই হয়তো হয় নি। কিংবা যা হয়েছে তা মনেরই কথা। মনের সব কোণের খবর কি আর আমরা রাখি? নিজের মনেই থাকে বিলিয়ন কোণ। এতসব কোণোর কোন কোণে কে থাকে কে জানে? সব প্রকাশ করা যাবে না। যারা পড়বে তারা হজম করতে পারবে না। তাই যা যা ভেবেছি ও কল্পনা করেছি তা ঢুক গিলে হজম করে ফেললাম। বিধাতার সেরা গুণের একটি হলো মানুষ মনে মনে যা ভাবে তা অন্য মানুষ পড়তে পারে না। এটা মানুষকে দিয়েছে আল্লাহ পাক বড় রহম করে। না হলে ঝগড়া ফ্যাঁসাদে পৃথিবী ভরে যেতো।

এসব ভাবতে ভাবতে দিগন্তে তাকাই। দেখি দিগন্ত দেখা যায় না। কেবলই নতুন বাড়িঘর। কয়েকবছর আগেও এখানে বসলে দিগন্ত দেখা যেতো। এখন দিগন্ত দেখা জরুরি নাকি মানুষের বসবাস জরুরি? পরিবার পরিকল্পনা জরুরি নাকি নতুন বাড়িঘর বানানো জরুরি। এসব আপেক্ষিক প্রশ্ন।“ আইনস্টাইন এসব বলতে পারবে না। কেবল জানে আপেক্ষিক তত্ত্ব।“ কারও জন্য পরিবার পরিকল্পনা জরুরি। আর কারো জন্য দরকার কেবল ঘর বাড়ি বানানো। ইট পাথরের দুনিয়ায় ইটের দাম থাকে, মানুষের দাম থাকে বটে। আচ্ছা বিশ্বের সবগুলো অট্রালিকা বিক্রি করলে যে দাম হবে সবগুলো মানুষ বিক্রি করলে সেই দাম পাওয়া যাবে? কি জানি। মোড়ের ট্রাফিক পাগল থেকে জেনে নিতে হবে। তার কাছে জগতের সব উত্তর পাওয়া যায়। ফিরার সময় দেখলাম এক মহিলা উঠানে বসে মাছ বানায়। অনেক অনেক ছোট ছোট রুই মাছ। মাছগুলো বড় হলে কত ভালো হতো। বড় হতে হতে মানুষের তর সয় না। কখন ধরবে আর টপাটপ খাবে। মানুষ যে পরিমাণ খেতে পারে, যতকিছু খেতে পারে অন্য কোনো প্রাণী এত কিছু এত পরিমাণ খেতে পারে না। এরকম দশটা ‍ দুনিয়া দিলেও মানুষ খেয়ে বলবে। কী খেলাম, পেটের কোণাও ভরে নাই। আরেকটু খাবার দাও। ক্ষুধার্ত মানুষ ক্ষুধার্ত বাঘের চেয়েও হিংস্র। মানুষের ক্ষুধা আবার নানানরকম। পেটের ক্ষিধা, চেটের ক্ষিধে, ও মনের ক্ষিধা। পেটের ক্ষিধা মেটাতে পারে। চেটের ক্ষুধাও মিটাতে পারে না, মনের ক্ষুধাও মেটাতে পারে না।

মানুষ পারে এমন তালিকা অনেক বড় তা যেমন সত্য

মানুষ পারে না এমন তালিকাও অনেক বড় তাও সত্য।

-ড. সফিকুল ইসলাম।

(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )

Share Now
Author

Dr. Shafiqul Islam

(BBA, MBA, DU; Mphil, Japan; PhD, Australia) Deputy Secretary, Government of Bangladesh. Chief Executive Officer, Cumilla City Corporation, Local Government Division, Ministry of LGRD
error: Content is protected !!

My Shopping Cart