জীবন থেকে নেওয়া সাতটি শিক্ষা
১।
আপনি যাদের কাছ থেকে উপকার বা সহযোগিতা পান, তাঁদেরকে উপকার বা সহযোগিতা করার সুযোগ আসলে আপনি নিশ্চয়ই তা করেন। হয়তো সুযোগ খুব কমই আসে।
কিন্তু অন্যদেরকে সহযোগিতা বা উপকার করার সুযোগ বরাবরই থাকে। তাই যখনই কাউকে উপকার বা সহযোগিতা করার সুযোগ আসলে তা করে ফেলুন। আপনাকে উপকার বা সহযোগিতা করতে নতুন নতুন মানুষ সহসাই হাজীর হয়ে যাবে। দুনিয়াই এমন।
কারো কাছ থেকে উপকার পেলে বা সহযোগিতা পেলে আপনার যেমন ভালো লাগে, ঠিক তেমনি আপনার উপকার বা সহযোগিতা যে পায় তারও খুব ভালো লাগে। তাই যত পারেন মানুষের কাজে লাগেন। আপনার কাজে লাগার জন্য কত মানুষ চলে আসবে আপনি হয়তো জানেনওনা।
সবই চলে ঈশারায়। উপরের ঈশারায় কিংবা অজানা ঈশারায় বা অদৃশ্য ঈশারায়।
……………………..
২।
জমানা এখন এমন হইসে, দুনিয়ার সবাই এখন এলিট। সবাই ভাব লয়। বরং সাধারণ লোকই খুব কম। হাতে গোনা দুএকজন। আমি সাধারণই হবো, এটাই আমার অ্যাম্বিশন।
…………..
৩।
মানুষ এমন যে ‘মেসি চা বয় থেকে বড় ফুটবলার হয়েছে‘‘ ‘এপিজে কালাম হকার থেকে রাষ্ট্রপতি হয়েছে‘ ‘স্টিভ এতিমখানা থেকে অ্যাপলের প্রধান হয়েছে ইত্যাদি বড় গলায় বলবে, শেয়ার করবে ।
কিন্তু তার পরিচিত কেউ গরীব ক্ষমতাহীন থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে গেলে, বা ক্লাশের শেষ রোলধারী ছাত্রটা কোটিপতি ব্যবসায়ী হয়ে গেলে ঠোঁট উল্টে বলবে
আরে ধুর! সেতো আগে না খেয়ে থাকতো, এখন দুই কলম শিখছে, নামিদামি হইসে!
কিংবা
আরে ধুর! ওতো ক্লাশের শেষ বয় ছিল এখন কোটিপতি হয়ে ভাব মারে!
এরা হলো সেফুদা‘র “কী হিংসে হয়?“ রোগে আক্রান্ত।
এরা জানেনা যে, প্রতিটি সফল মানুষই একসময় অসফল/ব্যর্থ/পিছিয়ে ছিলো। ছিলো বলেই সে নিজগুণ ও অধ্যাবসায়ে আজ সফল।
…………………………..
৪।
মানুষ প্রয়োজনে বা বিপদে পড়ে কাছে এলে বা ফোন করলে বিরক্ত হবার কিছু নেই। বরং ভেবে নেওয়া উচিত যে তাদের বিপদের দিনে তারা আমাকে আশ্রয় হিসেবে ভেবেছে। মানুষের প্রয়োজনে বা বিপদে আশ্রয়স্থল হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়।
অন্য সময় ভুলে থাকলে বা খবর না নিলেও মাইন্ড করার কিছু নেই। কেননা সবাই সবসময় খবর নিলে সময় দেবার মতো সময়ওতো আমাদের নেই। তাইনা? আমাদের অনেকেরই কাছের বা পরিচিত মানুষ আছে হাজার হাজার বা লাখ লাখ। সবাই যদি অনবরত ফোন করে বা খবর নেয় বা বাসায় দেখতে আসে, তাহলে তো তাদের সময় দিতে পারবোনা। এত সময় ও সামর্থ্যও আমাদের নেই। তাইনা?
যা হয় তাই ভালো। যেভাবে হয় সেভাবেই ভালো।
সবকিছু আমাদের মতো করে হবেনা। অন্যদের মতো করে হওয়াও আমার মতোই হওয়া। কারণ অন্য হাজার অনেকের মধ্যে আমিও একজনা।
……………
৫।
এক . কিছু কাজ সবাই করে যেমন বাথরুমে যাওয়া, রান্না, খাওয়া, গোসল, বাজার করা ইত্যাদি। তাছাড়া সামান্য খুচরা সময় আড্ডা, টিভি দেখা, বন্ধু বা আত্মীয়কে দেখা, খেলা বা বিনোদন সবাই করে।
এসব কাজে দৈনিক ৬/৮ ঘন্টা খরচ করে সাধারণ মানুষ। তবে সফল মানুষেরা এসব কাজে ২/৪ ঘন্টার বেশি খরচ করেনা।
দুই. একটি কাজ সবাই করে যেমন ঘুম।
ঘুমে দৈনিক কেউ ৭/১১ ঘন্টা খরচ করে সাধারণ মানুষ। তবে সফল মানুষেরা এসব কাজে ৪-৭ ঘন্টার বেশি খরচ করেনা।
তিন. অফিস, ব্যবসা বা নিজের পেশার কাজও সবাই করেন। দিনে প্রায় ৮ ঘন্টা। তবে সফল মানুষেরা ৮ ঘন্টার মূল কাজটিতো করেনই, পাশাপাশি বাড়তি কিছু এর মধ্যেই করার চেষ্টা করেন। যেমন এ সময়ে সাধারণরা যে পরিমাণ বা মানের কাজ করেন, সফলরা তার দ্বিগুন কাজ করার চেষ্টা করেন।
*উপরের তিনরকম কাজ করার পর সাধারণ মানুষের আর কিছু করার সময় থাকেনা। কারণ দিনের ২৪ ঘন্টা সময় শেষ।
সফল মানুষেরা উপরের তিন রকম কাজ করার পরেও ৩/৪ ঘন্টা অতিরিক্ত পান। এবং সেটা তার আগ্রহ আছে সেরকম কোন সৃষ্টিশীল কাজ করায় বা জীবনের কোন স্বপ্ন বাস্তবায়নে ব্যয় করেন। এবং এ কারণেই তারা সফল।
সফলরা দ্বিগুণ বা তিনগুণ কাজ করেন বলেই তারা সফল।
(সফলদের এরকম রুটিন প্রতিদিন বা প্রতিবছর একরকম হবেনা, তবু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরকম যে তারা সাধারণদের করা কাজগুলোর বাইরে বাড়তি কাজ করেন, সাধারণ ব্যস্ততার মধ্যেই সময় বের করে সময়কে ঠিকমতো কাজে লাগান)
……………………..
৬।
যা কিছু তোমাকে কষ্ট দেয় তা থেকে তমি যদি নিজেকে মুক্ত না কর, তবে
তুমি তাদেরকে রক্তাক্ত করবে যারা তোমাকে কাটেনি।
…………………………
৭।
কিছু কিছু দিন বেশি বেশি উতপাদন করার আর দক্ষতার। কিছুদিন যায় শুধু সুখে আর ভালোবাসায়। কিছুদিন পরিশ্রম আর উন্নতির। কিছুদিন যায় সবগুলোতেই।
কিছু কিছু দিন শুধু চলে যায়, কিছুদিন হয়তো ভুল, হয়তোবা শুদ্ধ, তবু চলে যায়।
এ নিয়ে ভাবার কিছু নেই, দিন মাস বছর শেষে আমরা ঠিক হয়ে যায়।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )