ক্ষতের মুখোমুখী হোন
এটা একান্তই আপানার, সবসময়ই আপনার বিষয়। জ্বী আপনার জীবনের অমীমাংসিত ক্ষতের কথা বলছি। আপনি হয়তো অস্বীকার করতে পারেন, চেপে রাখতে পারেন, উড়িয়ে দিতে পারেন, চাপা দিতে পারেন আপনার সব অমীমাংসিত ক্ষতকে। আপনি হয়তো বিভিন্ন ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারেন, ভিন্ন দৃষ্টি থেকে দেখে প্রশমিত করতে পারেন, ইতিবাচকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করেন, নিজেকে সরিয়ে রাখেন, দূরে রাখেন। আপনি হয়তো নিজেকে ভিন্নভাবে বা ভিন্নরূপে হাজীর করেন, অমীমাংসিত ক্ষত ঠিক আপনার আশেপাশে ঘুরে। আপনি হয়তো অনেক টাকা খরচ করে মেকি ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করেন, হৈ হুল্লুর করেন, প্রলেপ দেবার চেষ্টা করেন, সুখী ভাব নেবার চেষ্টা করেন কিন্তু সব আসলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
আসলে কিছুই হয়না। যদি আপনি অমীমাংসিত ক্ষতর মুখোমুখী না দাঁড়ান, গভীর বিশ্লেষণ না করেন। ক্রমান্বয়ে প্রাথমিক চিকিতসা, স্থায়ী চিকিতসা না করেন। ক্ষত আসলে থেকেই যায়, অবচেতনে ঠিক ঘুরে, মননে মগজে, ঘরে বাইরে, দৃশ্যে বা অদৃশ্যে। প্রকৃতির এটাই নিয়ম। এসব ক্ষত জীবন্ত থাকে, রয়ে রয়ে হৃদয়ে বাজে। মাথার ভিতর ঘুরে, অভিজ্ঞতায় দৃশ্য দেবে, নতুন ভাষায় বর্ণনা দিবে, সব চোখের সামনে ভাসবে। আপনার পথকে বাঁধাগ্রস্ত করবে, কন্ঠ রুদ্ধ করবে, চোখকে বাষ্পীত করবে, বুকে পাথর চাপবে।
তাই অমীমাংসিত ক্ষতকে, অপ্রকাশিত কষ্টকে ফেস করুন। মুখোমুখী দাঁড়ান, নিজের সবকিছুর সাথে অন্তর্ভূক্ত করুন, তাকে সব অনুষঙ্গর অংশ হিসেবে নিয়ে জীবনের পরতে পরতে হাজীর করেই এগুন। তবেই সে ক্ষত শক্তিতে রূপান্তরিত হবে।
জীবনের সত্যগুলো এমনি। আমাদেররকে ক্ষত ফেস করতে হয়। যদি আমরা সঠিকভাবে ক্ষতকে ডিল না করি, তবে সে ক্ষত আমাদেরকে নিয়ে ডিল করবে। এর বাইরে কোন পথ নেই। নাওয়ের মাঝি কে হবে? আপনি নাকি ক্ষত তার সিদ্ধান্ত নিন।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )