Detail

Home - শিক্ষা - কেন ছেলেরা পিছিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে?

কেন ছেলেরা পিছিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে?

কেন ছেলেরা পিছিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে যা পেলাম।

প্রথম ভাগ: আমার মতামত।

ক) কেন ছেলেরা পিছিয়ে যাচ্ছে?- এ প্রশ্নে কেন মেয়েরা এগিয়ে?- সে ইংগিত নেই। মেয়েরা তার নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে। মেয়েদের জন্য শুভকামনা। মেয়েরা এগিয়ে গেছে মেয়েদের নিজগুণে। মেয়েরা এগিয়ে গেছে ছেলেরা পিছিয়ে যাবে- এটা কোন কারণ হতে পারেনা। কারণ, এখনো ছেলেরা সামাজিক সিস্টেম ও পিতৃতান্ত্রিক পরিবেশ সামান্য হলেও বেশি সুবিধা ভোগ করে। সুতরাং ছেলেদের পিছিয়ে যাবার কোন কারণ নেই। কারণ থাকলে তা তারা নিজেরাই।

খ) গ্রামের ছেলেদের বেশিরভাগই প্রতিবেশির বাড়ির প্রবাসীর বড় দালান, বড় টেলিভিশন দেখে স্বপ্ন দেখা শুরু করে তারও বিদেশ যাওয়া লাগবে। অথবা কতিপয় অভাব অনটনে থাকা বাবা-মাও সন্তানকে জমি জমায় কাজে লাগায় বা বিদেশে পাঠিয়ে দেবে বলে স্বপ্ন দেখায়- যা তাঁকে পড়াশোনার প্রতি নিরুতসাহিত করে। এ সংখ্যাটা অনেক বড়।

গ) আরেকটা গ্রুপ আছে যারা শহরে বা গ্রামে বাস করে যাদের বাবা বা বড়ভাই প্রবাসে থাকে বা দেশে ব্যবসা করে। অনেক টাকার মালিক। তারা হোন্ডা বাহিনী বা ব্যানার বাহিনীতে জয়েন করে। হালকা রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে, ফেসবুকে পোস্ট দেয় নেতাকে সামনে রেখে, মঞ্চের পেছনে দাঁড়িয়ে। পরের টাকায় আজাইরা ভাব নেয়। পাঠ লয় আরকি। ভাবখানা এমন এমনিতেই দেখি অনেক দাম, অনেক সালাম। পড়ে আর কী হবে! (বয়সের কারণে বুঝতে পারেনা যে বয়স পার হলে কেউ পুছবেনা!)

ঘ) ছেলেদের মধ্যে আমি ‘অনেক বেশি বুঝি‘, ‘আমি কম পড়েই পারি‘, ‘আমার মুখস্ত করা লাগেনা, বুঝে নিলেই হয়‘, ‘আমি কম সময় দিয়েই অনেক বেশি শিখি‘- এ ধারণাটা বদ্ধমূল। এটাই তাদের খারাপ প্রধান কারণগুলোর একটি।

ঙ) ছেলেরা বাবা-মায়ের ও শিক্ষকের উপদেশ ও অনুশাসন অপেক্ষাকৃত কম শুনে বা কম মানে।

চ) ছেলেরা ক্লাসে ও বাইরে কিংবা ঘরে অপেক্ষাকৃত বেশি অমনোযোগী। মেয়েরা শ্রম বেশি দেয়, মেয়েরা সময় বেশি দেয়।

ছ) ছেলেরা স্কুল/কলেজ টাইম বাদ দিলে বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটায় রাস্তাঘাটে বা প্রতিবেশির বাড়িতে বা দোকানে বা বন্ধুর বাড়িতে। এ কারণে মনোযোগের ব্যঘাত ঘটে। এবং বাইরে কী করে বাবা-মা জানেনা। মেয়েরা ঘরে থাকায় অমনোযোগের কিছু ঘটলেও বাবা-মা দেখে কী করছে না করছে।

জ) সাম্প্রতিক ইস্যু যেমন টেলিভিশন, ভিডিও গেম, ইন্টারনেট, মোবাইল, ফেসবুক ছেলেদের অমনোযোগ বাড়িয়েছে সত্য। তবে এগুলো যেসব পরিবার এভেইল করতে পারে সেখানে মেয়েদেরও এ সুযোগ অনেক ক্ষেত্রে আছে। তবু মেয়েরা বেশিরভাগসময় ঘরে থাকে বিধায় বাবা-মায়ের চোখে চোখে থাকে। ছেলেরা এসব প্রযুক্তির অপব্যবহারের ব্যপক সুযোগ নেয়। বেশিই নেয়।

……………………

দ্বিতীয় ভাগ: অন্যদের কমেন্ট থেকে যা পেলাম।

ক) অল্প বয়সে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া।

খ)ছেলেরা ডিস্ট্রেকটেড, ঘুরে বেশি, আড্ডা দেয়।

গ)নেশা। যেহেতু নেশাজাতীয় দ্রব্য যেমন ইযাবা ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘ) মেয়েরা সিরিয়াস, ছেলেরা উদাসীন।

ঙ)সেক্সুয়াল মেটারিয়াল ও পর্ণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজলভ্য হয়ে যাওয়া।

চ) আজাইরা টেনশান বা ইমুশনাল টেনশান! যে মেয়েটি পরীক্ষা দিচ্ছে, তাকে নিয়েও ছেলেরা টেনশন করে!

ছ) ছেলেরা রাজনীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক (সেবন এবং বিপণন) বা এই জাতীয় নানান রকমের মহৎকর্মে ব্যস্ত থাকে!

জ) দেশের পুরুষ আর মহিলাদের অনুপাত ১০০.৩ : ১০০। প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের ভর্তির হার ৫০.৬৮%।

ঝ) মেয়েরা  মুখস্থবিদ্যায় অধিক পারদর্শী।

ঙ) মেয়েদের পিছনে লেগে থাকা,মাদক,আর বাবা মার কথা অমান্য করা।

চ) সন্ধ্যার পরে যে ছাত্র পড়ার টেবিলে থাকার কথা, তাকে আমরা দেখতে পাই স্কুলমাঠে কিংবা বাজারে অথবা রাস্তার মোড়ে কোনো দোকানে আড্ডা দিতে

ছ) পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা স্বাধীনতা বেশী ভোগ করে।
মেয়েদের স্বাধীনতার ক্ষেত্র তুলনামুলক কম হওয়ায় একটু বেশী শাসনের আওতায় থাকে।
তাই পড়াশুনাটা একটু বেশী করে।

-ড. সফিকুল ইসলাম।

(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )

Share Now
Author

Dr. Shafiqul Islam

(BBA, MBA, DU; Mphil, Japan; PhD, Australia) Deputy Secretary, Government of Bangladesh. Chief Executive Officer, Cumilla City Corporation, Local Government Division, Ministry of LGRD
error: Content is protected !!

My Shopping Cart