তুচ্ছ অনৈতিকতাটি কী আসলেই তুচ্ছ? : নকল
আজি হতে শতবর্ষ পরে ……………… । হ্যা রবি ঠাকুরের এ লাইন মনে করে আমি হতাশ হয়েছি। গত তিনবছর ধরে জেএসসি/জেডিএস পরীক্ষা কেন্দ্রে ঘুরেছি। আমার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। আমি খুব হতাশ, মনে প্রচন্ড আক্ষেপ আমার। এক তীব্র বেদনা ভিতরে।কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে রাগে ক্ষোভে যন্ত্রণায় সবার সাথে চিৎকার চেচামেচি করি। গাড়ীতে বসে গাইগুই করি। এসির হাওয়া গায়ে লাগেনা। শরীর ঘামে। ঘাম আর ঠান্ডা মিলে খুক খুক কাশি হয়। ভাবি এ কী দেখি! অশুভ প্রতিযোগিতা আর প্রচারণার খেলা।একটি বড় (আসলে ছোট) বেঞ্চে তিনজন করে বসে। ছাত্র/ছাত্রীরা বসে গল্প করে, কথা বলে, পরস্পর পরামর্শ করে এ পরীক্ষা দিচ্ছে, শিক্ষকরা যথাসম্ভব খাতায় স্বাক্ষরে ব্যস্ত, বারান্দায় উকি মেরে দেখছে বড় কোন অফিসার এসেছে কিনা। সতর্কবাণী দিতে হবে যে! অভিভাবক, শিক্ষক, ছাত্র, বোর্ড সবাই মিলে যেভাবে অশুভ প্রতিযোগিতায় নেমেছে এর শেষ কোথায়? কেউ পরিণাম ভাবছেনা। বাকীর লোভে নগদ পাওনা কে ছেড়েছে এ ভুবনে? তাই বলে এতটা আত্মঘাতি অনৈতিকতা? ভুলে গেলে চলবেনা ”হোয়াট গোজ অ্যরাউন্ড কামস অ্যারাউন্ড” (যা আশেপাশে ঘটে তার কোননা কোন প্রভাব আমাদের উপর অবশ্য পড়ে)।যাদেরকে অনৈতিকভাবে আমরা পাস করিয়ে দিচ্ছি তাদের কৃত ভবিষ্যত অনৈতিক কর্ম দ্বারা আমরা কী আক্রান্ত হতে পারিনা? যেমন তাদের কেউ যদি ভূয়া ডাক্তার বা দূর্ণীতিবাজ পিয়ন বা ভোটচোর রাজনীতিবিদ হয়ে যায় তবে?! না পড়ে যদি গোল্ডেন এ প্লাস বা এ প্লাস পাওয়া যায় তবে আর ছাত্র পড়বে কেন? সত্যিকার ভালো ছাত্র আর ফাঁকিবাজ ছাত্রের তফাৎটা কোথায়? ভালো ছাত্ররা কী হতাশ হবেনা? না পড়ে স্বীকৃতি পাওয়া জেএসসিতে এ প্লাস পাওয়া ছাত্র কি আর ক্লাশ নাইনে পড়াশোনা করবে? সে তো নিশ্চিত যে আবার দেখে দেখে এ প্লাস পাবে এসএসসিতে! আমরা সবাই মিলে নতুন প্রজন্মের মেধাকে গলাটিপে হত্যা করছিনাতো? এসব ভাবতে ভাবতে আমার মাথা ঘুরে। চোখে ঝাপসা দেখি। এভাবে চললে আজ হতে ৫০/১০০ বছর পরে কী হবে? কাদের হাতে দেশ পরিচালিত হবে? যারা অনৈতিকভাবে পরীক্ষায় পাস করেছে তাদের হাতে? তবে দেশের ভবিষ্যত কী?
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )