ডিনার চিটচেট
গত সপ্তাহে ডিনারে বসে পারিবারিক চিটচ্যাট চলছিল। এর মধ্যে আমার মেয়ে স্কুলের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছিল। শ্রেয়া বলছিল
‘‘ অস্ট্রেলিয়াতে ক্লাশমেটরা নানান বিষয়ে আলাপ করতো। যেমন খেলাধুলা, কোন খেলা কার প্রিয়, কোন খেলোয়াড়ের স্টাইল কার পছন্দ। জিওগ্রাফি বা হিস্টরির বিভিন্ন ইস্যু। কিংবা বইয়ের কোনো চরিত্র ফানি, কোন বই পড়ছে, কোন বই পড়বে, কোন লেখক প্রিয়, কোন গল্পটা অন্যভাবে লেখা যেতো। কিংবা আইসিটির নতুন কোন দিক ভালো লাগে, সাইন্সের কোন আবিস্কার কার মাথা হ্যাক করে দেয়, সাইফাই মুভি কেন প্রিয়, এনিমেশন কেন টানে। ইত্যাকার হাজার বিষয়ে ওদের সাথে আলাপ হতো।
আর এখানে বাংলাদেশে ক্লাসমেটরা আলোচনা করে সব পারিবারিক বিষয়। কার বাবা কী, কার মা কী, কার বাবার কী কী আছে, কার ভাইয়ের কত ক্ষমতা, কার বোন সুন্দরী, কার মায়ের কত শাড়ি বা গহনা আছে, কার মা ফ্যাশন আর ঢং করে, কার মা সারাক্ষণ টৈটৈ ঘুরে, কার কথার ঝাঁঝ বেশি, ক্লাসের কোন বাচ্চা ধনী, কোন বাচ্চা গরীব, কে কয়টা বার্গার খাইলো, কে কত টাকা নিয়ে আসে ক্লাসে, কার নিজের আইফোন বা ট্যাব আছে। ইত্যাকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। বিরক্তিকর!‘‘
আমি শুনে কিছুটা অবাক, কিছুটা বিমূঢ় হয়ে কী বলবো কী বলবোনা এরকম একটা অভিব্যক্তি মুখে নিয়ে তাকিয়েছিলাম মেয়ের দিকে। পরে সময় করে ওকে বলেছিলাম, কী করে সে এখানকার আলোচনায় অস্ট্রেলিয়ান ক্লাসমেটদের মতো নানান বিষয়গুলো নিয়ে আসতে পারে।
………….
পরে আমি ভাবতে বসলাম। কেন আমাদের স্কুলের বাচ্চারা এরকম জাগতিক তুচ্ছ বস্তুবাদের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে?
একটা উত্তর হতে পারে। বাবা-মা, ভাইবোনেরা ও আত্মীয় স্বজনরা বাসায় এসব নিয়ে মেতে থাকেন ও আলোচনা করেন। যা পরোক্ষভাবে বাচ্চাদের মাথায় ঢুকে যায়।
-ড. সফিকুল ইসলাম।
(লেখাটি ভালো লাগলে নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। কিংবা ইমেইল করতে পারেন অনুভূতি জানিয়ে Shafiq.bcs@gmail.com। শেয়ার করতে পারেন ফেসবুকে বা লিংকডইনে। )